Description
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামী বিদ্যাপিঠ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দ্বীনের বহুবিধ খেদমত আঞ্জাম দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কওমী মাদরাসা হিসেবে উলামায়ে কিরামের অন্তরে স্হান করে নিয়েছে। বার বার তার পবিত্র অঙ্গন ধন্য হয়েছে দেশী-বিদেশী বহু আল্লাহওয়ালা বুযুর্গের পদচারণায়। জামি‘আ রাহমানিয়ার খেদমতের বিস্তৃত পরিধি ও তার সূচারু সুষ্ঠ যুগোপযোগী পরিকল্পিত কার্যক্রম সম্পর্কে যারাই যথাযথভাবে অবগতি লাভ করার সুযোগ পেয়েছেন, তাদের সকলেই অন্তর থেকে এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রাণ খুলে দু’আ করেছেন, বাড়িয়েছেন সহযোগিতার হাত। যার দরুন শত ঝড়-ঝঞ্জা ও হাজারো প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জামি‘আ রাহমানিয়া তার মঞ্জিলে মাকসাদের দিকে এগিয়ে চলছে অব্যাহত গতিতে। অল্পদিনের মধ্যেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে ঈর্ষণীয় মাকামে। এসব কৃতিত্বের পিছনে যাদের অবদান নীরবে রূহের ভূমিকা পালন করছে, তারা হলেন জামি‘আ রাহমানিয়ার মুখলিস আসাতেযায়ে কিরাম। আর তাঁদের অন্যতম হলেন আমার পরম শ্রদ্ধেয় উস্তাদদ্বয় মুফতী মনসূরুল হক সাহেব ও মাওলানা হিফযুর রহমান সাহেব দামাত বারাকাতুহুম। পাক ভারত বাংলা উপমহাদেশের আধ্যাত্মিক রাহবার বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ মুহিউস সুন্নাহ হযরত মাওলানা শাহ্ আবরারুল হক সাহেব দামাত বারাকাতুহুমের এই খলীফাদ্বয় ব্যক্তি জীবনের সকল কামনা-বাসনাকে তুচ্ছ করে জামি’আ রাহমানিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সত্যিকার মুখলিস আলেম গড়ার কারিগর জনাব মুফতী মনসূরুল হক সাহেব শুধু যে উস্তাদ তা নয় বরং ছাত্রের হতাশা ও প্রতিকূল অবস্থায় পরম হিদাকাংখী অভিভাবক ও বন্ধুরূপে আশার বাণী শুনিয়ে উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে তাঁর মত আর কাউকে দেখিনি। আমাদের মত ভিন্ন পরিবেশ থেকে আগত ছাত্রদের জন্য তিনি ছিলেন পরম শান্তনার জায়গা ও আশ্রয় স্থল।
জামি’আ রাহমানিয়ার খেদমতসমুহের মধ্যে অন্যতম একটি জাতীয় খেদমত ছিলো ‘মাসিক রাহমানী পয়গাম’- এর প্রকাশনা। এ পত্রিকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিভাগ হলো প্রশ্নোত্তর বিভাগ। এ বিভাগে সমকালীন সমস্যা ও প্রশ্নাবলীর যুগোপযোগী যথাযথ উত্তর প্রদান করতেন জনাব মুফতী সাহেব। বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুফতী ও বাইতুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সাবেক খতীব জনাব মাওলানা মুফতী আব্দুল মুঈয রহ.-এর অন্যতম নায়েব ও শাগরেদ জনাব মুফতী মনসূরুল হক সাহেবের দেয়া উত্তরসমুহ এতই আকর্ষণীয় হতো যে, সচেতন পাঠক সমাজের পক্ষ থেকে এগুলোকে গ্রন্থাকারে প্রকাশের তাগীদ বার বার করা হয়েছে।
আমাদের বর্তমান আয়োজন দুই খন্ডে সমাপ্ত ‘ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া’ সে তাগীদের বাস্তবায়ন মাত্র। ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া বাংলার ইসলামী সাহিত্যের ক্ষেত্রেই শুধু নয় বরং মুসলিম জনগনের দ্বীনী রাহনুমায়ীর ক্ষেত্রেও যুগান্তকারী অবদান রাখবে ইনশাআল্লাহ।
বহু বাধার পথ পেরিয়ে পাঁচ পাঁচটি প্রুফ ও দুটি ট্রেনিং থেকে কালো অক্ষরগুলো শেষ পর্যন্ত সাদা কাগজের গায়ে স্হান করে নেয়া পর্যন্ত একদল নবীনের পরিশ্রম সম্পর্কে পাঠক হয়তো কোনদিনই জানতে পারবেন না। কিন্তু যার জানা সবচেয়ে বেশী জরুরী সেই মহান রাব্বুল ‘আলামীনতো এর অস্তিত্ব লাভের পূর্ব থেকেই জানেন। আল্লাহপাক তাদের সবাইকে দ্বীনের জন্য কবুল করুন।
আমরা ফাতাওয়ার এই নাজুক সংকলনটিকে ত্রুটিমুক্ত করার জন্য খুবই চেষ্টা করেছি, কিন্তু তারপরও ভুল-ত্রুটি থেকে যাওয়া স্বাভাবিক। কাজেই যদি কোন সচেতন পাঠকের চোখে এরূপ কোন অসংগতি ধরা পড়ে তাহলে আমাদের অবগত করলে আমরা পরবর্তী সংস্করণে তা শুধরে নিবো ইনশাআল্লাহ।